ডেঙ্গু একটি ভাইরাস জনিত জ্বর। এডিস মশা এই ভাইরাস বহন করে। আমাদের দেশে বর্ষাকাল এলেই, অর্থাৎ জুন-জুলাই মাসে, এই জ্বরের বিস্তার বেশি হয়।সারা বিশ্বের বছরে 400 মিলিয়ন এর মত লোক এতে আক্রান্ত হয়। এখনো এর কোন টিকা আবিষ্কার হয়নি। তাই প্রতিরোধই উত্তম ব্যবস্থা।ডেঙ্গু জ্বরের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকারের নানান দিক সম্পর্কে -
I) ডেঙ্গু জ্বরের কারণ :
ডেঙ্গু জ্বর চার ধরনের ভাইরাস জনিত ট্রপিক্যাল বায়ুমণ্ডলীয় রোগ। এটি সাধারণত ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী এডিস মশা দ্বারাই ছড়ায়।
II) ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ:
1) একজন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির সাধারণত উচ্চজ্বর হয় অর্থাৎ তাপমাত্রা 104 থেকে 105 ডিগ্রি এবং তার বেশিও হয়ে থাকে আর সাথে সাথে এই লক্ষণগুলোর অন্তত দুটি আপনার চোখে ধরা পড়বে।2) তীব্র মাথা ব্যাথার সাথে চোখের পেছনের দিকে তীব্র ব্যথা অনুভব করা।
3) জয়েন্ট-এ জয়েন্ট-এ ব্যথা বা মাংসপেশির হাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করা। এজন্য এর অন্য আরেকটি নাম হচ্ছে হাড়ভাঙ্গা জ্বর।
4) হামের মত ফুসকুড়ি দেখা যায়।
5) নাক, দাঁতের মাড়ি থেকে অল্প রক্তপাত হতে পারে রক্তের শ্বেত কণিকার পরিমাণ কমে যাবে। লক্ষণগুলো অবশ্য রোগীর বয়স অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। ছোট বাচ্চা ও প্রথমবার আক্রান্তদের থেকে, বয়স্ক শিশু ও দ্বিতীয়বার আক্রান্তদের মাঝে এর তীব্রতা বেশি হয়।
III) ডেঙ্গু হলে কি কি জটিলতা দেখা দেয়:
1) সাধারণত তিন থেকে সাত দিনের মধ্যেই জ্বরের তাপমাত্রা কমতে থাকে। তবে এর লক্ষন গুলো যদি দেখা যায় তাহলে,2) দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে ।
3) তীব্র পেট ও ক্রমাগত বমি আসলে।
4) ত্বকের লাল দাগ, নাক ও মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে।
5) বমির সাথে রক্ত আসলে কালো বা আলকাতরার মত পায়খানা হলে।
6) ত্বক ফ্যাকাশে, ঠান্ডা হলে ও স্যাতসেতে কিম্বা শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুতই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
IV) ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায়:
এ রোগের কোন নির্ধারিত টিকা এখনো আবিষ্কার হয়নি। তাই প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে জমে থাকা। খোলা পাত্রের পানিতে মশা ডিম পাড়ে, পোষা প্রাণীর খাবার পাত্র, পানির পাত্র, ফুল গাছের টব, নারকেলের মালা ইত্যাদিতে পানি জমে থাকলে সেগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে।দিনের আলোতেও এরা কামড়ায়, তাই দিনের বেলাতেও মশারি ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে যাতে মশা কামড়াতে না পারে, তার ব্যবস্থা নিতে হবে।
V) ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা:
এ রোগের কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তাই রোগ লক্ষণ গুলো রুপার চিকিৎসা দেয়া হয় যেমন, রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখা, প্রচুর পানি পান করানো, স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে কাপড় ভিজিয়ে শরীর বারবার মুছে দেয়া। প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়ানো, তবে তা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ আলোকে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে অ্যাসপিরিন বা এ জাতীয় ঔষধ না দেওয়া। সর্বোপরি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে ভয়ের কিছু নেই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে এবং ওষুধ সেবন করলে, সম্পন্ম আরোগ্য লাভ করা সম্ভব হবে।
সুস্থ শরীর সবল মন,
বাঁচতে হলে প্রয়োজন
0 comments:
Comment me.....